BANGLADESH
Welcome to Detailsbd.com

মুক্তিযুদ্ধ রচনা - (১০০, ২০০, ৩০০ ও ১০০০ শব্দের)

Category - 
ghore bose spoken english
২৮% ডিসকাউন্টে পেতে আজই এই লিংক থেকে কোর্সটি কিনুন
সবগুলো রচনা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
4.4/5 - (18 votes)

মুক্তিযুদ্ধ রচনা টি ৯ টি পয়েন্ট ও ১০০০ শব্দ দিয়ে বানানো। তবে এখানে একই রচনা ১০০, ২০০, ৩০০ শব্দের ও দেওয়া আছে যা পরীক্ষায় ফুল মার্ক পেতে সাহায্য করবে।

মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১০০ শব্দের

ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করলে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার জন্য রুখে দাঁড়ায়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। এই যুদ্ধে বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছিল যে, তারা স্বাধীনতার জন্য কতটা আপোষহীন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি আমাদের জাতীয় চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য আমাদের প্রতিটি বাঙালিকে সচেতন হতে হবে।

উপসংহার

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায়। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অর্জন করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের

ভূমিকা : মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করে। এতে লাখো বাঙালি নিহত হয়। এই গণহত্যা বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা করে। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপর পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। ভারতের সহায়তায় মুক্তিবাহিনী ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা আত্মসমর্পণ করে। এতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা স্বাধীনতার জন্য কতটা আপোষহীন। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে।

মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি

মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি মানবতাবাদী সংগ্রাম। এই যুদ্ধে বাঙালি জাতি শুধুমাত্র স্বাধীনতার জন্যই লড়াই করেনি, তারা অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়িয়েছে। এই যুদ্ধে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধীসহ সকল শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করে। এটি একটি নৈতিক ও মানবিক সংগ্রাম ছিল।

উপসংহার

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায়। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে। এই যুদ্ধের স্মৃতি আমাদের জাতীয় চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য আমাদের প্রতিটি বাঙালিকে সচেতন হতে হবে।

আরও পড়ুন  সময়ানুবর্তিতা রচনা - SSC, HSC

মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের

ভূমিকা : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি সশস্ত্র সংগ্রাম। এই যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পটভূমি

পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের অত্যাচার ও বঞ্চনার কারণে এই যুদ্ধ হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান ছিল পাকিস্তানের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, কিন্তু তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ছিল খুবই কম। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ ও জনগণকে শোষণ করত।

ঘটনাপ্রবাহ

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণবিক্ষোভ শুরু হয়।

২৫ মার্চ রাতে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করে। এই গণহত্যার ফলে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয় এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ শরণার্থী হয়।

মুক্তিবাহিনীর গঠন

২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিবাহিনী গঠিত হয় এবং তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান

ভারতের সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনী পশ্চিম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সফলভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিবাহিনী ঢাকায় প্রবেশ করে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ গ্রহণ করে।

মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। এই যুদ্ধের ফলে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি লাভ করে এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই যুদ্ধ বাঙালি জাতির জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেমের উন্মেষ ঘটায়।

মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাঙালি জাতি বিশ্বের কাছে একটি নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ করে যে, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম।

উপসংহার

মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায়। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে। এই যুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়।

মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১০০০ শব্দের

ভূমিকা : বাঙালির জাতীয় জীবনে মহিমান্বিত এক অহংকার, গৌরবোজ্জ্বল এক বিজয়গাথার নাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষের আত্মত্যাগের অম্লান প্রতীক, দেশপ্রেমের এক জীবন্ত স্মারক। নয় মাসব্যাপী বীরত্বপূর্ণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি

মধ্যযুগের প্রথম থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রায় হাজার বছর ধরে ধনধান্য পুষ্পভরা সমৃদ্ধ বঙ্গের প্রতি তুর্কি, আফগান, পাঠান, মোগলরা আকর্ষিত হয়েছে ও দীর্ঘকাল শাসন করেছে। এরপর আসে লোভী ইংরেজরা শাসনের নামে শোষণ ও লুণ্ঠনের জন্য। প্রায় দুশো বছর ঔপনিবেশিক শাসনের পর তদানীন্তন পূর্ববঙ্গকে পাকিস্তানের অধীন করে ইংরেজরা বিদায় নেয়। এর মধ্যেই বাঙালি জাতি অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটিয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন তথা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে নিজ মাতৃভাষার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, যা ছিল স্বাধীনতার বীজ এরপর ১৯৫৪-এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি নির্মাণ ও মজবুত করেছে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নির্লজ্জ বৈষম্য, সম্পদ পাচার, উন্নয়নে একমুখী নীতি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর জুলুম-নির্যাতন এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার কথা ভাবতে উজ্জীবিত করে। এর ওপর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা ও আলোচনার নামে ষড়যন্ত্রকে এ দেশের মানুষ মেনে নিতে পারেনি। পাকিস্তানি চক্রান্ত বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। উন্মাতাল মানুষ সেই ডাকে বিপুলভাবে সাড়া দেয় । ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লক্ষ লক্ষ মানুষের ঐতিহাসিক সমাবেশে ১ম দিকনির্দেশনামূলক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা দেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সমগ্র জাতির কণ্ঠে দৃপ্ত স্লোগান ধ্বনিত হতে থাকে ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর'।

আরও পড়ুন  অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম রচনা - ১০ পয়েন্ট

মুক্তিযুদ্ধের ডাক

চক্রান্তকারী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী একদিকে আলোচনার নামে প্রহসন, অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিপুল সংখ্যক সৈন্য ও অস্ত্র এদেশে পাঠাতে থাকে। অসহযোগ আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে তদানীন্তন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ২৫ মার্চ মধ্য রাতে পূর্ববাংলার ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে আকস্মিকভাবে আক্রমণ করে। তারা নির্মমভাবে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে বাঙালির অবিসংবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে ওয়্যারলেস বার্তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এ দেশের আপামর মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ই.পি.আর, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ছুটি ভোগরত সৈনিক, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক, সশস্ত্র পুলিশ, আনসার, ছাত্র-যুবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিরোধ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ।

মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল কুষ্টিয়ার মুজিবনগর (বৈদ্যনাথতলা) আমবাগানে জন্ম নেয় একটি নতুন রাষ্ট্র, বাংলাদেশ। গঠিত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। নতুন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম (রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করেন। তাঁরা হলেন— রাষ্ট্রপতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; উপ-রাষ্ট্রপতি : সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী : তাজউদ্দিন আহমদ; পররাষ্ট্র, সংসদ ও আইনমন্ত্রী : খন্দকার মুশতাক আহম্মদ; অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী : এম. মনসুর আলী; স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী : এ.এইচ.এম. কামরুজ্জাম্মান। কর্নেল এম.এ.জি. ওসমানীকে সেনাপ্রধান করে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশকে এগারোটি সেক্টরে ভাগ করা হয়। সেক্টর কমান্ডাররা হলেন : সেক্টর-১ মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর রফিকুল ইসলাম, সেক্টর-২ মেজর খালেদ মোশাররফ,

ক্যাপ্টেন এ.টি.এম. হায়দার, সেক্টর-৩ মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ, মেজর নুরুজ্জামান, সেক্টর-৪ মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত, সেক্টর-৫ মেজর মীর শওকত আলী, সেক্টর-৬ উইং কমান্ডার এম.কে. বাশার, সেক্টর-৭ মেজর নাজমুল হক, মেজর কিউ. এম. জামান, সেক্টর-৮ মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, মেজর এম.এ. মঞ্জুর, সেক্টর-৯ মেজর এম.এ. জলিল, সেক্টর-১০ কোনো নির্দিষ্ট কমান্ডার ছিলেন না, সেক্টর-১১ মেজর আবু তাহের, স্কোয়াড্রন লিডার এম. হামিদুল্লাহ খান । এছাড়া কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে প্রায় ১৭ হাজার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গড়ে উঠেছিল ‘কাদেরিয়া বাহিনী’।

আরও পড়ুন  বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা - ১৫ পয়েন্ট

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও শরণার্থী শিবির

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয় । তাদের ঠাঁই হয় শরণার্থী শিবিরে। সেখান থেকে আগ্রহী ও উপযুক্ত লোকদের বাছাই করে তাদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় । সেক্টর কমান্ডারদের অধীনে তারা গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পর্যাদস্ত

ও হীনবল করে ফেলে। গ্রাম ও শহরের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসাসেবাসহ নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় । I

মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন

ভারত ও সোভিয়েত রাশিয়ার জনগণ ও সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সরাসরি সমর্থন করে। এছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি প্রভৃতি দেশের অসংখ্য বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিল্পী-সাহিত্যিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে নানাভাবে অকুষ্ঠ সাহায্য-সহযোগিতা করেন। ফলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নাজুক অবস্থায় পড়ে মনোবল হারিয়ে ফেলে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বিজয়

মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে ভীত-সন্ত্রস্ত হানাদার বাহিনী গ্রামাঞ্চল ছেড়ে শহরে পালাতে থাকে। ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করে বিমান হামলা চালায়। এ সময় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী চারদিক থেকে যৌথ অভিযান শুরু করে এগুতে থাকে ঢাকার দিকে। যৌথবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণ ও বোমাবর্ষণের মুখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ১ মিনিটে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হানাদার বাহিনী বিনা শর্তে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। জেনারেল নিয়াজী তাঁর নিজ পোশাক থেকে সামরিক ব্যাজগুলো খুলে অবনত মস্তকে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় প্রতিষ্ঠিত হয় । এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ জাতীয় পতাকা উন্নত শিরে তার বিজয় গৌরব ঘোষণা করে।

মুক্তিযুদ্ধের খেতাব

মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষের জীবনদান, আড়াই লাখ নারীর সম্ভ্রম ও কোটি কোটি টাকার সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য অকুতোভয় সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করতে করতে জীবনদান করেছেন, তাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রতি সম্মানস্বরূপ দেওয়া হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ', 'বীরউত্তম’, ‘বীরবিক্রম’ ও ‘বীরপ্রতীক' খেতাব। বীর শহিদদের মধ্যে সাতজন পেয়েছেন ‘বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাব, এঁরা হলেন— সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, ন্যান্সনায়েক মুন্সী আবদুল রউফ, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ, সিপাহি হামিদুর রহমান, স্কোয়াড্রন ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন ও ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। আমাদের সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে তাঁদের মৃত্যুঞ্জয় স্মৃতি।

উপসংহার

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আনন্দ-বেদনার এক স্বর্ণালি অধ্যায়। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশই ছিল মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ। এই আদর্শকে সমুন্নত রেখে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা ও সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। যাতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় উদ্বুখ হয়ে সুখী, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা টি ভালো লেগে থাকলে এবং আপনার উপকারে আসলে কমেন্ট এ ধন্যবাদ লিখতে পারেন এবং রচনা টি শেয়ার করতে পারেন।

 Share this post from here. 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram