BANGLADESH
Welcome to Detailsbd.com

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা - ১৫ পয়েন্ট

Category - 
ghore bose spoken english
২৮% ডিসকাউন্টে পেতে আজই এই লিংক থেকে কোর্সটি কিনুন
সবগুলো রচনা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
4/5 - (6 votes)

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা টি ১৫ টি পয়েন্ট ও ১৫০০ শব্দ দিয়ে লেখা। এতে কোনো অযথা পয়েন্ট বা প্যারা যুক্ত করা হয়নি যা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পেতে সাহায্য করবে।

এই রচনা টি কয়েকটি নামে পরীক্ষায় আসতে পারে যেমন,

  • বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা
  • বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ রচনা
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা
  • বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা
  • বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা

তবে যেভাবেই আসুক, এই রচনা টি আপনারা অনায়াসে লিখে আসতে পারবেন এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।

রচনা: বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

ভূমিকাঃ বঙ্গবন্ধু বা শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম অর্জন হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা।আর সেই স্বাধীনতার সাথে যার নামটি চিরস্মরনীয় হয়ে আছে তিনি হলে বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

‘বাংলাদেশ’ নামটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে বঙ্গবন্ধুর নামটি এমন ভাবে মিশে আছে যা তাকে বাঙালি জাতির কাছে ওমর করে রেখেছে। তার অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ঐক্কবদ্ধ করতে পেরেছিলেন সমগ্র বাঙালি জাতিকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ও প্রধান আহ্বায়ক তিনি। তার ভরসাতেই লাখ লাখ বাঙালি ঝাপিয়ে পরেছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং স্বাধীন হয় একটি নতুন দেশ যার নাম “বাংলাদেশ”।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা

জন্ম ও পরিচয়ঃ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চ (৩ রা চৈত্র ১৩২৭ বঙ্গাব্দ) গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম “শেখ ‍লুৎফুর রহমান”, “মাতার নাম সায়েরা খাতুন”। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে শেখ মুজিব ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান।

শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রাখেন তাঁর নানা “শেখ আবদুল মজিদ”। ছোটবেলায় তাকে আদর করে সবাই ‘খোকা’ বলে ডাকত। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী এবং সাধারণ মানুষ ও গরিব-দুঃখীদের প্রতি ছিল তার আলাদা টান। পরিবারের সাথে টুঙ্গিপাড়াতেই কাটে তার শৈশব ও কৈশোরের দিন গুলো।

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবনঃ

১৯২৭ সালে ৭ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাজীবন শুরু হয় গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে। এর দুই বছর পর ১৯২৯ সালে ৯ বছর বয়সে তিনি গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। এর দুই বছর পর পিতার সরকারী চাকরীর বদলিজনিত কারনে ১৯৩১ সালে তিনি মাদারীপুর ইসলামিয়া স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং এখানে তিনি ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

১৯৩৪ সালে তিনি বেরিবেরি নামক জটিল রোগে আক্রান্ত হন এবং পরবর্তিতে আরও কিছু জটিল রোগ ধরা পরায় তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত চার বছর বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। সুস্থ হবার পর তিনি ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জে মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।

আরও পড়ুন  পদ্মা সেতু রচনা - ২০০ শব্দ, ৫০০ শব্দ ও ১২০০ শব্দ

১৯৪৪ সালে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে আই.এ. এবং ১৯৪৭ সালে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তিতে ভারত বিভাজনের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে ভর্তি হন। পরবর্তিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয় এবং এখানেই তার ছাত্রজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

প্রাক রাজনৈতিক জীবন :

বিশ্ব রাজনীতির অবিসংবাদিত কিংবদন্তি তথা বাংলা ও বাঙালি জাতির অমর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগেই গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ দেখে নিজের মনের ভেতর এক প্রকার কষ্ট অনুভব করতেন। ভুখাদের মুখে তাঁর নিজের খাবার তুলে দিয়েছেন এমন ঘটনা একটি দুটি নয়; বরং অনেক। তাছাড়া শীতকালটা এলেই অনেক অসহায় শীতার্তকে তিনি তাঁর নিজের চাদর দান করে দিয়েছেন। অধিকন্তু তখন থেকেই তিনি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন। অন্যায় কিংবা অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোক না কেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতিবাদ করতে বিন্দুপরিমাণ বিচলিত হতেন না। আর রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেই দেশ ও জাতির বন্ধুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি।

রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও বিশেষ বিশেষ অবদান :

ছাত্রাবস্থা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। আর তাঁর রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে বিশেষ বিশেষ অবদান/

ভাষা আন্দোলন :

১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন আইন পরিষদে 'পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে’ বলে ঘোষণা দিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে ওই ঘোষণার প্রতিবাদ জানান। ২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে ভাষার প্রশ্নে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবক্রমে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ' গড়ে ওঠে। ১১ মার্চ হরতাল চলাকালে সচিবালয়ের সামনে থেকে তিনি গ্রেফতার হন। তারপর ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি খাজা নাজিমউদ্দিন আবারও ঘোষণা করে ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু’। এ ঘোষণার প্রতিবাদে বন্দি থাকা অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে রাজবন্দি মুক্তি এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি দিবস হিসেবে পালন করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান। ১৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এ দাবিতে জেলখানায় অনশন শুরু করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের করলে ওই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। ফলে সালাম, জব্বার, রফিক, বরকত ও সফিউরসহ অনেকেই শহিদ হন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলে বসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং ১৩ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন। তারপর ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলখানা থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন ।

আরও পড়ুন  কম্পিউটার রচনা ১০ পয়েন্ট - Pdf

মুক্তিসনদ ৬ দফা দাবি :

১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোর সম্মেলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি পেশ করেন। একে ম্যাগনাকার্টাও বলা হয়ে থাকে। তবে এ দাবি পেশকে কেন্দ্র করে ওই বছর তিনি মোট ১২ বার গ্রেফতার হন ।

আগরতলা মামলা :

১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৩৫ জন সেনা ও সিএসপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করে। তারপর ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

গণঅভ্যুত্থান :

১৯৬৯ সালের জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ' গঠিত হয়। এ পরিষদ আগরতলা মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে এ আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে  রূপ নিলে ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য আসামিকে বিনাশর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে 'কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ' আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

বাংলাদেশ নামকরণ :

১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন 'বাংলাদেশ'।

নির্বাচনি বিজয় :

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলায় জাতীয় পরিষদের ১৬২টি এলাকাভিত্তিক আসনের মধ্যে ১৬০টিতে জয়লাভ করে। তাছাড়া সংরক্ষিত ৭টি মহিলা আসনসহ আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত সর্বমোট আসনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৬৭ ।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ : ১৯৭১

১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানামুখী তালবাহানার আশ্রয় নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা হিসেবে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। জনতার মহাসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন— “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।” মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি অসহযোগের ডাকও দেন। এ অসহযোগ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। অপরদিকে তালবাহানা ও আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে জেনারেল ইয়াহিয়া ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। তারপর ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তথাকথিত 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর অতর্কিতে এক আগ্রাসী আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ও রাজারবাগ পুলিশ সদর দফতর । এমতাবস্থায় রাত ১২টা ২০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর রাত ১টা ৩০ মিনিটে নিজ বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ, যা অনতিবিলম্বে মুক্তিসংগ্রামে রূপ নেয়। যুদ্ধ চলে সুদীর্ঘ নয় মাস । ত্রিশ লাখ শহিদ ও দুই লাখ ছিয়াত্তর হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি তথা আমাদের জাতির পিতা। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার তাঁকে বিনাশর্তে মুক্তি প্রদানে বাধ্য হয়। সেদিনই তাঁকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন পাঠানো হয় । ৯ জানুয়ারি লন্ডনে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপর লন্ডন থেকে ঢাকা আসার পথে তিনি দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেন।

আরও পড়ুন  মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার রচনা - ৯ পয়েন্ট

ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি.ভি. গিরি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান। ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছালে তাঁকে অবিস্মরণীয় এক সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে লাখো জনতার মহাসমাবেশ থেকে অশ্রুসিক্ত নয়নে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন । ১২ জানুয়ারি তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতি গঠনে হাত দেন।

জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম অবদানসমূহ

সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে ১,৬৫,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের চাল-ডালসহ পূর্ণাঙ্গ রেশন ব্যবস্থা চালু করেন ।

পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই-খাতা ও পোশাক প্রদানের ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা দেন। এমনকি ৪৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ, ১১ হাজার নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও ১৫ হাজার নতুন বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন তিনি। তারপর ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন। হকারদের পুনর্বাসনের জন্য 'হকার্স মার্কেট’ গড়ে তোলেন। ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ এবং ১০০ বিঘা জমির সিলিং ধার্য করেন। ক্ষতিগ্রস্ত ২৫০টি ব্রিজ-কালভার্ট, বিধ্বস্ত কলকারখানা, রাস্তাঘাট পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করেন। শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাঁর চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অতি অল্প সময়ে জাতির জন্য পরিপূর্ণ একটি উত্তম সংবিধান উপহার দেওয়া ছাড়াও যা কিছু করেন তা ইতিহাসে বিরল। পবিত্র ইসলাম ধর্মের সেবায় তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করেন। যেমন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ সম্প্রসারণ; ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাকরণ; বিশ্ব ইজতেমার জায়গা দান; রেডিও-টিভিতে কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থাকরণ; মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন ইত্যাদি ।

মৃত্যু

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একাত্তরের পরাজিত শক্তিসহ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে সামরিক বাহিনীর কতিপয় কুচক্রী ও ক্ষমতালোভী সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বাড়িতে হামলা চালিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া নিকটাত্মীয়স্বজনসহ সপরিবারে শহিদ হন তিনি।

উপসংহার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার স্মৃতির প্রতি চিরদিন এ দেশের মানুষের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা অব্যাহত থাকবে। তার সম্পর্কে কবির সশ্রদ্ধ উচ্চারণ -

যতদিন রবে পদ্মা-মেঘনা গৌরী-যমুনা বহমান
ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান ।

 Share this post from here. 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram