BANGLADESH
Welcome to Detailsbd.com

আইইএলটিএস কি - খরচ, প্রস্তুতি, পরীক্ষার নিয়ম, বই pdf

Category - 
4.5/5 - (2 votes)

এই লেখাতে আপনারা জানতে পারবেন আইইএলটিএস কি, আইইএলটিএস খরচ, আইইএলটিএস প্রস্তুতি ও আইইএলটিএস পরীক্ষার নিয়ম এবং কোর্স সম্পর্কে।

স্বপ্ন যখন বাইরের দেশে উচ্চশিক্ষা, চাকরির ও ইমিগ্রেশনের তখন নিজের যোগ্যতা প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রথমেই নাম আসে আইইএলটিএস (IELTS) বা International English Language Testing System এর। আইইএলটিএস হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষার দক্ষতার সনদ। এই পরীক্ষার মাধ্যমে মূলত ইংরেজিতে নিজের দক্ষতা কতটুকু সেটি যাচাই করা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আমেরিকা অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করছে। ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইইএলটিএস গ্রহণ করে থাকে। এই পরীক্ষায় সবাই অংশ নিতে পারেন। এর জন্য কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। এই পরীক্ষার জন্য একজন প্রার্থীকে অবশ্যই ১৬ বছর বা তার বেশি হতে হবে।

বাইরের দেশে উচ্চশিক্ষা (স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি) এবং ইমিগ্রেশন/ চাকুরি/ব্যবসা ইত্যাদির উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে আইইএলটিএস এর প্রয়োজন পরে। সেক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার জন্য লাগে একাডেমিক আইইএলটিএস। আর অন্য কোনো উদ্দেশ্যে জেনারেল আইইএলটিএস দিতে হয়।

আইইএলটিএস কোর্স

আইইএলটিএস কোর্স আপনি বিভিন্ন জায়গা থেকে করতে পারবেন। তবে কোর্স যেখানেই করুন, পরীক্ষা আপনাকে ব্রিটিশ কাউন্সিলেই দিতে হবে।

বর্তমানে আপনি খুব কম খরচে ঘরে বসেও আইইএলটিএস কোর্স করে ফেলতে পারবেন।

Learn IELTS now
Learn IELTS

নিচে কিছু অনলাইন ও অফলাইন কোর্সের তালিকা দিয়ে দিচ্ছি, এখান থেকে আপনারা আইইএলটিএস কোর্সটি কমপ্লিট করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

প্রতিষ্ঠানমাধ্যমখরচ
10 Minute SchoolOnline3650Tk
EshikhonOnline Live5,089Tk
MentorsOffline12650Tk
British CouncilOffline13900Tk
PenstonOffline14500Tk

আইইএলটিএস পরীক্ষার নিয়ম

আইইএলটিএস পরীক্ষা ২ ধরনের পদ্ধতিতে নেওয়া হয় একাডেমিক ও জেনারেল ট্রেনিং। আসুন এই দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

একাডেমিক মডিউল

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য একাডেমিক মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়।

জেনারেল ট্রেনিং

কোনো শিক্ষার্থী যদি কারিগরি বিষয় বা প্রশিক্ষণে ভর্তি হতে চায়, তবে তাকে জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হবে। এ ছাড়া যারা ইমিগ্রেশনের জন্য যেতে চাইলে, তাদেরকেও জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হবে।

আইইএলটিএস পরীক্ষায় কি কি থাকে ?

আইইএলটিএস পরীক্ষায় ২টি মডিউলে (একাডেমিক কিংবা জেনারেল) মূলত ৪টি অংশ থাকে-

আইইএলটিএস লিসেনিং

লিসেনিং এ আপনাকে মোট ৪টি রেকর্ডিং শোনানো হবে। উল্লেখ্য, রেকর্ডিং এ কনভারসেশন থাকবে ব্রিটিশ উচ্চারণে। এই চারটি রেকর্ডিং শোনার পর আপনাকে আলাদা একটি উত্তরপত্রে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। একটি রেকর্ড একবারই বাজিয়ে শোনানো হবে।

রেকর্ডিং ১ – এক নাম্বার রেকর্ডিং এ থাকবে দুজন ব্যক্তির মাঝে দৈনন্দিন জীবনযাপনে ব্যবহার করা হয় এমন একটি বিষয়ে কথোপকথন।

রেকর্ডিং ২ – এই রেকর্ডে সোশ্যাল কন্টেক্সটে একটি মনোলোগ শোনানো হবে; যেমন- স্থানীয় সোশ্যাল ফ্যাসিলিটি নিয়ে একটি স্পিচ।

রেকর্ডিং ৩ – এখানে সর্বোচ্চ ৪ জন ব্যক্তির মাঝে হচ্ছে এমন একটি কথোপকথন শোনানো হবে, সেটি কোনো ট্রেনিং অথবা শিক্ষা বিষয়ে হতে পারে; যেমন- ৩ জন ছাত্র শিক্ষকের সাথে একটি অ্যাসাইনমেন্ট অথবা প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করছে এমন।

আইইএলটিএস রিডিং

এই টেস্টে ৩টি পেসেজ থাকবে এবং পেসেজ পড়ে উওর করতে হবে। এখানে মূলত পেসেজ পড়ে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। ৩টি বিভাগে মোট ৪০টি প্রশ্ন থাকবে এবং প্রতিটির মান ১ ধরা হবে। সময় থাকবে ১ ঘন্টা। পেসেজ থেকে বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি থাকবে।

এই অংশে একাডেমিক আইইএলটিএস এবং জেনারেল আইইএলটিএস এর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। একাডেমিকের থেকে জেনারেল তুলনামূলক সহজ হয়। যেমনঃ একাডেমিকের পেসেজ বা আর্টিকেলটি জার্নাল, ম্যাগাজিন, বই থেকে আসে। অন্যদিকে জেনারেলে ম্যাগাজিন, পত্রিকা, বিজ্ঞাপন, বই অথবা হ্যান্ডআউট থেকে লেখা তুলে দিবে। একাডেমিকের মতো গবেষণা অথবা বিজ্ঞান বিষয়ক না, বরং দৈনন্দিন জীবনে মুখোমুখি হয় এমন বিষয়ই থাকবে জেনারেলে।

আইইএলটিএস রাইটিং

এই টেস্টে সাধারণত কতটুকু কল্পনা শক্তি খাটাতে পারবে বা কোনো বিষয়ের উপর লিখতে পারবে তার পরীক্ষা করা হয়। এক ঘণ্টার মধ্যে দুটি প্রশ্নের উত্তর বা দুইটি পেসেজ লিখতে হবে। প্রথম প্রশ্নে একটি গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট, অথবা ম্যাপ দেওয়া থাকে যেটিকে নিজের কথায় বিশ্লেষণ করতে হবে। দ্বিতীয় প্রশ্নে একটি আর্গুমেন্ট অথবা স্টেটমেন্ট থাকবে সেটার উপর মতামত এবং সেটার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে।

একাডেমিক আইইএলটিএস এবং জেনারেল আইইএলটিএস -এর রাইটিং এ প্রথম প্রশ্নে একটু পার্থক্য রয়েছে। জেনারেল আইইএলটিএস এর ক্ষেত্রে ডায়াগ্রাম, চার্ট ইত্যাদির জায়গায় একটি চিঠি লিখতে হয়; সেটি ফরমাল, ইনফরমাল অথবা পার্সোনাল হতে পারে। কিন্তু ২য় প্রশ্ন একই রকম হবে।

আইইএলটিএস স্পিকিং

এই টেস্টের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিনে পরীক্ষাস্থলে যেতে হয়। দুই-তিন জন পরীক্ষক থাকেন যারা ইংরেজীতে প্রশ্ন করেন। তিনটি অংশে ১১ থেকে ১৪ মিনিটের এই টেস্টে- প্রথম অংশে কিছু সাধারণ প্রশ্নের (যেমন – পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, বন্ধু ইত্যাদি) উত্তর দিতে হয়। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে এবং দুই মিনিট কথা বলতে হয়। তৃতীয় অংশে পরীক্ষকের সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে কথোপকথন বা প্রশ্ন-উওর চালাতে হয়, যেগুলো একটু বিশ্লেষণধর্মী হয়।

পরীক্ষার রুমে পাসপোর্ট, পেন বা পেন্সিল এবং লেভেল ফি পানির বোতল নেওয়া যাবে কিন্তু কোন প্রকার ইলেক্ট্রনিকস যন্ত্র বা কোন প্রকার ব্যাগ নেওয়া যাবে না।

আইইএলটিএস খরচ

বাংলাদেশে আইইএলটিএস পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ফি ১৮,৭৫০ টাকা। এই ফিতে পরীক্ষার মূল ফি, প্রবেশপত্রের ফি, এবং টেস্ট রিপোর্টিং ফি অন্তর্ভুক্ত।

আইইএলটিএস পরীক্ষার স্পেশাল এডভান্সড রিটেক ফি ১৬,২৫০ টাকা। এই ফিতে শুধুমাত্র একটি দক্ষতার রিটেকের ফি অন্তর্ভুক্ত।

আইইএলটিএস পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ফি অনলাইনে বা ব্রিটিশ কাউন্সিল বা আইইএলটিএস-এর রেজিস্টার্ড পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে করা যেতে পারে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে, প্রার্থীদের একটি পাসপোর্ট-আকারের ছবি এবং একটি বৈধ পাসপোর্টের অনুলিপি আপলোড করতে হবে।

আইইএলটিএস পরীক্ষার খরচের বিস্তারিত:

  • রেজিস্ট্রেশন ফি: ১৮,৭৫০ টাকা
  • স্পেশাল এডভান্সড রিটেক ফি: ১৬,২৫০ টাকা
  • প্রবেশপত্রের ফি: ফ্রি
  • টেস্ট রিপোর্টিং ফি: ফ্রি

আইইএলটিএস প্রস্তুতি

আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠার কিছু নেই। নিয়মিত প্রস্তুতি নিয়ে যথেষ্ট ভালো স্কোর করা সম্ভব। শুরুতেই লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে।

তবে ইংরেজিতে এত দিনকার যা দক্ষতা, সে অনুযায়ীই লক্ষ্য ঠিক করবেন। রাতারাতি ভালো স্কোর করা সম্ভব নয়। আবার ইংরেজিতে আপনি যথেষ্ট দক্ষ হলেও কোনো প্রস্তুতি ছাড়া পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ স্কোর করা সম্ভব নয়। রোজকার কাজের মধ্যেই অন্তত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখা উচিত। কত দিন ধরে প্রস্তুতি নেবে, এটা শুধু দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। অন্তত তিন মাস সময় হাতে রাখা ভালো। প্রশ্নপত্র সমাধান করাটা প্রস্তুতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘড়ি ধরে প্রশ্নপত্র সমাধান করতে হবে। সম্ভব হলে পরীক্ষার পরিবেশে একসঙ্গে সব অংশের পরীক্ষা দিতে হবে।

কেমব্রিজ থেকে প্রকাশিত আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নীলক্ষেতে কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো সমাধান করতে হবে। বাজারে অসংখ্য বই পাওয়া যায়। তবে সবই নির্ভরযোগ্য এ কথা বলা যায় না।

এ পরীক্ষার জন্য কোচিং করতে হবে কি না এটা সম্পূর্ণ নিজের সিদ্ধান্ত। বাড়িতে পড়াশোনা করতে হবে। আইইএলটিএস নিবন্ধনের সময় প্রস্তুতির জন্য দুটি ছোট বই দেওয়া হয়। এগুলো ভালোমতো পড়ুন ও সমাধান করুন।

ব্যাকরণের অনেক খুঁটিনাটি জানতে পারা যায়। আবার এমন অনেক বিষয়, যা স্কুল-কলেজে পড়েছেন কিন্তু এখন মনে নেই, তা ঝালিয়ে নিতে পারা। এ পরীক্ষা নিয়ে অনেকের কাছ থেকে অনেক রকম কথা আসে। এতে দ্বিধা বা উৎকণ্ঠায় ভুগা যাবে না।

আইইএলটিএস সম্পর্কে যেকোনো তথ্য পেতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি, বাংলাদেশ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিতে প্রস্তুতির জন্য প্রচুর ভালো বই পাওয়া যায়। তবে এগুলো ব্যবহারের জন্য লাইব্রেরির সদস্য হতে হবে।

নীলক্ষেত থেকে যেনতেন বই কিনে অর্থ ও সময় নষ্ট না করাই ভালো। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, আইডিপি অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই আইইএলটিএস হয়। তাদের কাছ থেকেই যখন সরাসরি তথ্য পাচ্ছেন, তখন অন্য কোথাও যাওয়াটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

আইইএলটিএস স্কোর

আইইএলটিএস স্কোর হলো বিশ্বের ১৪০টি দেশের বিভিন্ন সংস্থায় ভাষা দক্ষতার প্রধান মানদণ্ড। বর্তমানে অধিকাংশ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেই সাধারণত আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫ লাগে।

আবার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কোর ৫.৫ হলেই আবেদন করা যায়। কিন্তু ফলাফল ভালো না হলে আবেদন করা গেলেও ভিসা পাওয়া সম্ভাবনা কমে যায়।

উচ্চশিক্ষার জন্য কোন দেশে যেতে কত আইইএলটিএস স্কোর লাগবে এমন কোনো শর্ত নেই। সাধারণত বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এটি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় এবং বিষয়ের উপর নির্ভর করেও আবেদনের নূন্যতম স্কোরের ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন বিষয়ে পড়তে যেতে চাওয়া আগে সেটির শর্তগুলো দেখে নিতে হবে। বর্তমানে আইইএলটিস ছাড়াও বিদেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, আইইএলটিএস তেমনটা ভীতিকর মনে হয় আসলে তেমনটা নয়। যেহেতু এটা একটা টেকনিক্যাল পরিক্ষা,তাই ভালো স্কোর তুলতে প্রয়োজন পড়ে প্রচুর প্র্যাকটিসের।

 Share this post from here. 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram