BANGLADESH
Welcome to Detailsbd.com

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) কি ও কিভাবে শুরু করবো?

Category - 
4.3/5 - (3 votes)

এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এক ধরনের আধুনিক মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। মূলত ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে মিলন ঘটানোকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। যেমন ধরুন কোনো ওষুধ কোম্পানি তাদের ওষুধ বিক্রি করবে ১০০ টাকায়, এখন আপনি যদি সেই ওষুধটি একজন কাস্টমারের কাছে মার্কেটিং করিয়ে বিক্রি করিয়ে দিতে পারেন তাহলে আপনাকে ঐ ওষুধ কোম্পানি ১৫ টাকা কমিশন দিবে। এটাই হচ্ছে এফিলিয়েট কমিশন এবং এটাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।

Table of Contents

affiliate marketing ki?
affiliate marketing ki?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

যে সমস্ত কোম্পানি এফিলিয়েট মার্কেটিং অফার করে থাকে তারা তাদের অটো সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য আপনাকে কমিশন দিয়ে দিবে। প্রতিষ্ঠান ভেদে সাপ্তাহিক বা মাসিক ভাবে এসব পেমেন্ট তুলতে পারবেন।

একেকটি কোম্পানির বা প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু পণ্য বা সেবা থাকে। সেসব সেবা বা পন্য আপনার ওয়েবসাইটে, ইউটিউব চ্যানেলে অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করে বাড়িতে বসেই কাজ করতে পারবেন। আপনাকে প্রতিটি প্রডাক্ট বা পন্যের জন্য একটি ইউনিক লিংক দেয়া হবে। যখনই আপনার সেই লিংক এর মাধ্যমে কেউ সেই প্রডাক্ট বা পন্যটি কিনবে তখনই আপনার একাউন্ট এ সেই প্রডাক্ট এর কমিশন যোগ হয়ে যাবে। এভাবে আস্তে আস্তে অনেক টাকা জমা হয়ে যাবে আপনার একাউন্ট এ যা আপনি মাসিক বা সাপ্তাহিক ভাবে তুলতে পারবেন।

বিভিন্ন ধরনের এফিলিয়েট মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন PPS বা, PAY PER SALE এবং CPA বা COST PER ACTION, বর্তমানে দুটিই খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তরুন দের কাছে এবং দুটিতেই খুব ভালো মানের আয় করা সম্ভব। এখন আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করব।

PAY PER SALE (PPS)

Pay per sale কে রেভিনিউ শেয়ারিং ও বলা হয়। এই মডেল টা খুবই সহজ কিন্তু লাভও প্রচুর। এখন রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল টা নিয়ে একটু আলোচনা করি। এই মডেলে আপনি যখনই পন্যের মার্কেটিং করিয়ে একটি সেল জেনারেট করবেন তখন সেই সেলের লাভের একটি অংশ মার্চেন্ট আপনার সাথে শেয়ার করে তাই একে বলে রেভিনিউ শেয়ারিং। একটু বিস্তারিত বলছি,

ধরুন একজন মার্চেন্ট বা বিক্রেতার প্রোডাক্ট এর দাম হল ২০০০ টাকা এবং সে একজন এফিলিয়েট মার্কেটারের কাছ থেকে একটি সেল পেল। তখন বিক্রেতা তাকে এই ২০০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা ওই এফিলিয়েট মার্কেটারকে দিয়ে দিল। এটাই হচ্ছে Pay per sale বা প্রতি বিক্রিতে কমিশন।

সি পি এ মার্কেটিং (CPA MARKETING)

সিপিএ মার্কেটিং বা কস্ট পার একশন হচ্ছে আরেকটি মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনাকে সরাসরি কোনো পন্য সেল করতে হয়না। শুধুমাত্র কিছু একশন বা লিড জেনারেট করতে পারলেই আপনি কিছু ডলার ইনকাম করতে পারবেন।

যেমন ধরুন "ফ্রি আইফোন জেতার সুযোগ" নামে একটি অফার চালু করেছে কোনো মার্চেন্ট। এখন আপনাকে বলা হলো শুধুমাত্র কাস্টমারের কাছ থেকে তাদের ইমেইল আইডি সাবমিট করাতে পারলে আপনি ২ ডলার পাবেন। এখানে আপনাকে কিন্তু কোনো কিছু সেল করতে হচ্ছে না, কিন্তু একটা একশন বা লিড জেনারেট করেই আপনি ইনকাম করতে পারছেন। এটাই সিপিএ মার্কেটিং।

CPA মার্কেটিং সম্পর্কে আরোও বিস্তারিত জানতে এই লিংক এ ক্লিক করুন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করতে পারবেন?

দেখুন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটা সম্পুর্ন আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি যদি ভালো মানের মার্কেটার হতে পারেন তাহলে মাসে ১ লাখ টাকা ইনকাম করা কোনো ব্যাপার ই না আপনার জন্য। শুরুর দিকে প্রথম ৪-৫ মাস বা ১ বছর হয়ত আপনার ইনকাম নাও আসতে পারে। কিন্তু যখন ইনকাম আসা শুরু করবে তখন আস্তে আস্তে প্রতি মাসে আপনার ইনকাম বাড়তেই থাকবে। তাই ছেড়ে না দিয়ে লেগে থাকতে হবে, আর আস্তে আস্তে আপনি আরও পারদর্শি হয়ে উঠবেন। টপ মার্কেটার যারা আছেন বর্তমানে তারা প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করছেন শুধুমাত্র এই এফিলিয়েট মার্কেটিং করে। তারা যদি এত ইনকাম করতে পারে তাহলে আপনি কি ১০ হাজার টাকাও ইনকাম করতে পারবেন না ? অবশ্যই পারবেন যদি শ্রম দেন ও লেগে থাকেন।

আরও পড়ুন  ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্ট (web design and development) কি ?

এখন আপনি এত কষ্ট করে এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) শিখবেন আবার টাকাও খরচ করবেন কিন্তু কত টাকা আয় করতে পারবেন এটা একটা প্রশ্ন। এর উত্তর হচ্ছে আনলিমিটেড। আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন তার কোনো নির্দিষ্ট এমাউন্ট নেই। তবে আপনি যদি খুব ভালো এক্সপার্ট লেভেলের মার্কেটার হতে পারেন তাহলে আপনি প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

যারা টপ মার্কেটার তারা প্রতি মাসে ৫ থেকে ২০ লাখ টাকাও ইনকাম করছেন প্রতি মাসে। কিন্তু এই পর্যায়ে আসতে তাদের সময় লেগেছে ৫ থেকে ১০ বছর। তাই আপনিও যদি লেগে থাকেন এই ফিল্ড এ তাহলে আপনার ইনকামও সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকবে। আপনার যদি একটা ভালো মানের ওয়েবসাইট থাকে কিংবা একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে সেখানেও আপনার এফিলিয়েট পন্যের লিংক দিয়ে আপনি সেল জেনারেট করতে পারবেন। আর আপনি সর্বোচ্চ কত টাকা সেল জেনারেট করবেন তার কোনো লিমিট নেই। আপনি যত বেশি সেল করাত্র পারবেন ততই আপনার ইনকাম আসতে থাকবে।

তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং একটি মুক্ত পেশা। আপনি নিজেই নিজের সময় বেছে নিয়ে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি যদি কোনো কারনে ১ মাস কাজ নাও করেন তবুও আপনার ইনকাম কিন্তু আসতেই থাকবে। এটাকেই বলে প্যাসিভ ইনকাম (passive income), অর্থাৎ আপনি উপস্থিত না থাকলেও আপনার ইনকাম সোর্স বন্ধ হবে না।

কতবার ইনকাম পাবেন?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি কতবার কমিশন পাবেন তার ওপর ভিত্তি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

১. সিংগেল টায়ার
২. মাল্টি টায়ার

সিংগেল টায়ার (Single-Tier)

সিঙ্গেল টায়ার হচ্ছে একবার পেমেন্ট। মানে প্রতিটি সেলের জন্য আপনি মাত্র একবারই কমিশন পাবেন। আমাজন এফিলিয়েট যারা করেন তারা সকলেই সিংগেল টায়ার এফিলিয়েট মার্কেটিং করেন।

মাল্টি টায়ার (Multi-Tier)

মাল্টি টায়ার মডেলে একজন এফিলিয়েট যতজন গ্রাহক আনবেন তাদের কমিশন তো পাবেনই সাথে সেই গ্রাহকরা যদি আরো গ্রাহক নিয়ে আসেন তাহলে সেখান থেকেও একটা কমিশন পাবেন।

ধরুন আমার লিংক থেকে আপনি একটা পন্য বা সার্ভিস কিনলেন, এখন আপনিও একই প্রডাক্ট আপনার পরিচিত বন্ধু বান্ধবের মাধ্যমেও বিক্রি করলেন। তাহলে আপনার প্রতিটি সেল থেকেও আমি কিছু কমিশন পাবো এবং পেতে থাকব।

এফিলিয়েট প্রডাক্ট কয় ধরনের হয়?

এফিলিয়েট মার্কেটিং/Affiliate Marketing এ তিন ধরনের প্রডাক্ট থাকে।

১. ফিজিক্যাল প্রডাক্ট
২. ডিজিটাল প্রডাক্ট
৩. লিড জেনারেশন

১. ফিজিক্যাল প্রডাক্ট

ফিজিক্যাল প্রডাক্ট হচ্ছে সে সমস্ত প্রডাক্ট যা আমরা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করি। যেমন, ফার্নিচার, পোশাক, খাবার ইত্যাদি । এসব পণ্যে ২% থেকে শুরু করে ২০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া যায়। আমাজন এর সকল প্রডাক্ট এ তারা ২% থেকে ১০% কমিশন দেয়। এসব প্রডাক্টে ডেলিভারি হবার পরেই আপনি কমিশন পাবেন তাই অবশ্যই যে কোম্পানির সম্পর্কে ভালো ভাবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন যে তারা ঠিকমত ডেলিভারি দেয় কিনা।

 

২. ডিজিটাল প্রডাক্ট

ডিজিটাল প্রডাক্ট হলো সেসব পন্য যার কোনো ফিজিক্যাল অস্তিত্ব নেই। যেমন সফটওয়্যার, এপ্লিকেশন, ডিজিটাল সার্ভিস, ই-বুক, ওয়েব হোস্টিং, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন ক্লাস, ইত্যাদি। অর্থাৎ ভার্চুয়ালি ব্যবহার করতে হয় এমন সকল পণ্য হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট। এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট কারন ডিজিটাল প্রডাক্টে লাভ বেশি হয় এবং দ্রুত সেল হয়। তাছাড়া ডিজিটাল প্রডাক্টের কমিশন 5% থেকে শুরু করে 70% পর্যন্ত হয়।

৩. লিড জেনারেশন

লিড জেনারেশন হচ্ছে মূলত সিপিএ মার্কেটিং এর কাজ। অর্থাৎ আপনাকে শুধুমাত্র কোনো নির্দিষ্ট কাজ এর জন্য বা লিড এর জন্য পেমেন্ট করা হবে, যেমন কোনো এন্ড্রয়েড এপ্স এর জন্য সাইন আপ করানো বা কাস্টমারের ইমেইল সাবমিশন করানো ইত্যাদি। আপনাকে কোনো প্রডাক্ট সেল করতে হবে না, কিন্তু কিছু কিছু মার্কেটপ্লেসে এখন প্রডাক্টও সেল করাতে হয়।

লিড জেনারেশন বা সিপিএ মার্কেটিং (CPA marketing) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্ট টি পড়ুন।

কোথায় শিখবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং ?

কোথায় শিখবেন এটা সম্পুর্ন আপনার নিজের উপর নির্ভর করে। আপনি চাইলে ইউটিউব এ ফ্রিতেও শিখতে পারেন অথবা চাইলে পেইড কোর্স ও করতে পারেন।

তবে ফ্রি কোর্স করলে অনেক সময় লাগবে শিখতে তাছাড়া ফ্রিতে যারা শেখায় তারা আপনাকে প্রফেশনাল ভাবে শেখাবে না। তাই আপনার শিখতেও যেমন অনেক সময় লেগে যাবে তেমনি আপনার উৎসাহ টাও কমে যাবার সম্ভাবনা আছে।

আরও পড়ুন  ব্লগিং ( Blogging ) কি? | Blogging meaning in bengali

তবে অনলাইনে ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেল আছে যারা খুব ভালো শেখায় অথবা গুগলে সার্চ করেও আপনি বেশ কিছু টিউটোরিয়াল ও আর্টিকেল পেয়ে যেতে পারেন। আপনি চাইলে তাদের ভিডিও দেখে দেখে শিখতে পারেন। কিন্তু সেসব ভিডিও ইংরেজি তে করা বা হিন্দিতে করা। বাংলা ভাষায় এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখায় এমন ভালো কোনো চ্যানেল আমার জানা নেই।

আর যদি টাকা খরচ করে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে কোনো ট্রেনিং সেন্টার বা কোন কোর্স কিনে Affiliate Marketing শিখতে পারেন। তাহলে খুব অল্প সময়েই আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন এবং একটা নিয়মানুসারে শিখতে পারবেন। পেইড কোর্স কিনতে পারেন Udemy, Udacity থেকে, এখানে ইংরেজি কোর্স পেয়ে যাবেন। আর বাংলা কোর্স কিনতে চাইলে ITbari.com থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কোর্স কিনতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন আইটি সেন্টারেও চাইলে কোর্স করতে পারেন তবে খরচ বেশি হবে আপনার।

কিভাবে কাজ কাজ করবেন?

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) এ কাজ করার জন্য আপনার দরকার হবে ভালো মানের একটি ওয়েবসাইট অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল। বিভিন্ন ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। যেমন আপনি আপনার ওয়েবসাইটে প্রডাক্ট এর রিভিউ লিখে বা স্পেশিফিকেশন লিখে সেই আর্টিকেল টা SEO করে অথবা পেইড প্রমোশন করিয়ে সেল করতে পারেন। সেইম কাজ টা আপনি চাইলে ইউটিউবের মাধ্যমেও করতে পারেন আবার আপনার ফেসবুক পেইজের মাধ্যমেও করতে পারেন। আপনার কাজ হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিটর নিয়ে আসা, তারপর সেই ভিজিটর দের মধ্যেই যারা আপনার রিভিউ দেখে ওই প্রডাক্ট টি কিনবে, তাদের থেকে আপনি অটোমেটিক প্রমোশন পেয়ে যাবেন।

এক্ষেত্রে ভালো SEO বা Search Engine Optimization করতে পারলে আপনার আর্টিকেল বা ভিডিও টি গুগলের র‍্যাংকিং এ চলে আসবে এবং অটোমেটিক ভিজিটর আসা শুরু করবে। চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং বা SEO এর উপরও একটা কোর্স করে নিতে পারেন, এতে আপনি দারুণ উপকৃত হবেন। আর আপনি যদি ভালো মানের মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে ভালো প্রফিট করতে পারবেন অল্প সময়েই।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

আসুন জেনে নিই কিছু গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং টিপস যা আপনাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) এ সহায়তা করবে। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বেশি টাকা আয় করতে চান তাহলে আপনাকে এই বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কাজ করতে হবে। এই বিষয়গুলো হলো,

১. সঠিক পন্য বা নিশ নির্বাচন
২. সঠিক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন
৩. ওয়েবসাইট তৈরি ও ইউটিউব চ্যানেল তৈরি
৪. মার্কেটিং করা
৫. SEO করা
৬. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা
৭. নিয়মিত আপডেট করা

নিচে এগুলো নিয়ে বিস্তারিত দেয়া হলো।

সঠিক Niche (নিশ) বা পণ্য নির্বাচন

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) শুরু করার সময় প্রথম কাজ হলো সঠিক প্রডাক্ট নির্বাচন করা। এমন পন্য নির্বাচন করতে হবে যার চাহিদা বেশি এবং লাভও বেশি, মানে কমিশনের হারও বেশি। তাই পন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যত রিসার্চ করবেন তত লাভবান হবেন। ভুল পন্য নিয়ে মার্কেটিং শুরু করলে পরবর্তিতে পস্তাতে হবে, তাই ভালো করে মার্কেট রিসার্চ করাটা জরুরী।

সঠিক কোম্পানী বা ইন্ডাষ্ট্রি নির্বাচন

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) শুরু করার সময় অবশ্যই সঠিক কোম্পানির পন্য বিক্রি করাটা খুবই জরুরী। মনে রাখবেন, আপনি যে কোম্পানির প্রডাক্ট বিক্রি করবেন, সে কোম্পানির প্রডাক্ট ও সার্ভিস যদি ভালো না হয় তাহলে এই প্রডাক্ট কাস্টমার রা কিনতে চাইবে না। আপনার লাভও হবে না তাতে। তাই আপনার উচিৎ সঠিক কোম্পানি নির্বাচন করে সঠিন পন্য প্রমোশন করা, যাতে আপনার কাস্টমার রা আপনার কাছ থেকে পন্য বা সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট থাকে। মনে রাখবেন, যখন কোনো কাস্টমার সন্তুষ্ট হবে তখনই সে বার বার আপনার কাস্টমার হবে।

 

ওয়েবসাইট তৈরি ও ইউটিউব চ্যানেল তৈরি

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) করতে হলে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল বানাতে হবে এবং কন্টেন্ট বানাতে হবে। ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে আপনি মূলত আপনার প্রডাক্ট গুলোকে ফুটিয়ে তুলবেন এবং সেখান থেকেই আপনার প্রডাক্টগুলো সেল হবে। তাই ভালো মানের ওয়েবসাইট ও ভালো মানের কন্টেন্ট দরকার। আপনি যত সুন্দর করে আপনার প্রডাক্ট কে ভিজিটরের সামনে ফুটিয়ে তুলবেন ততই আপনার সেল বাড়তে থাকবে।

 

মার্কেটিং করা

শুধুমাত্র প্রডাক্ট কে সাজালেই বা কন্টেন্ট বানালেই হবে না। আপনাকে সেই কন্টেন্ট গুলোর মার্কেটিং ও করতে হবে যাতে আপনার কন্টেন্ট টি আপনার কাস্টমারের কাছে পৌছে যায়। মার্কেটিং অনেক ধরনের হতে পারে, আপনাকে মোটামুটি সকল ধরনের মার্কেটিং নিয়ে বিস্তর ধারনা রাখতে হবে। কিছু জনপ্রিয় মার্কেটিং সিস্টেম হচ্ছে,

আরও পড়ুন  Hosting - হোস্টিং কি? | hosting in bangladesh


১। ফ্রি মার্কেটিং
২। পেইড মার্কেটিং
৩। ইমেইল মার্কেটিং
৪। এস ই ও
৫। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
৬। ডিজিটাল মার্কেটিং

এই সবগুলো মার্কেটিং সম্পর্কেই আপনাকে ধীরে ধীরে শিখতে হবে এবং আপনার প্রডাক্টের সঠিক ভাবে মার্কেটিং করতে হবে।

SEO করা

SEO বা Search engine optimization বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় ও জরুরী একটি মাধ্যম, যার সাহায্যে আপনি আপনার কন্টেন্ট কে অধিক মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবেন কোনো ধরনের টাকা পয়সা খরচ ছাড়াই। SEO মূলত আপনার কন্টেন্ট বা আর্টিকেল কে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের টপ রেজাল্টে নিয়ে আসে। এতে করে কেউ যখন গুগলে আপনার পন্যের নাম লিখে সার্চ করে তখন আপনার আর্টিকেল বা কন্টেন্ট টি সবার উপরে দেখায়। ফলে অধিক মানুষ আপনার আর্টিকেল টি পড়ে এবং আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে অনেক অনেক ভিজিটর আসে। আর বুঝতেই পারছেন, যত বেশী ভিজিটর আসবে তত বেশী আপনার সেল হবে। তাই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন খুবই গুরুত্বপুর্ন ।

ডিজিটাল মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারনা থাকাটা খুবই জরুরী। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ফেললে আপনি খুব সহজেই আপনার সেল বাড়াতে পারবেন খুব অল্প সময়ে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভিতরে ইমেইল মার্কেটিং, লিড জেনারেশন, ফানেল তৈরি, সোশ্যাল মিডিয়া এডভারটিসমেন্ট, গুগল এড ইত্যাদি উল্ল্যেখযোগ্য।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা

বর্তমানে মানুষ সবচেয়ে বেশি একটিভ থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপনি যেই পন্যই সেল করতে চাননা কেন, তার কাস্টমার আপনি সোশ্যাল মিডিয়া তে পাবেনই। বর্তমানে এমন মানুষ খুবই কম যার একটি ফেসবুক আইডি নেই, অনেকের তো একাধিক আইডিও থাকে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আজকাল খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং আপনাকেও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। বর্তমানে ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, রেডিট, পিন্টারেস্ট, কুওরা খুবই জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোডাক্ট

বর্তমানে যেসব এফিলিয়েট প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটার রা কাজ করছে তার মধ্যে কিছু প্রোডাক্ট আছে যার কমিশন অনেক বেশি, আবার কিছু প্রোডাক্ট আছে যার কমিশন খুবিই কম। আপনাকে অবশ্যই রিসার্চ করতে হবে যে আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট এ কেমন কমিশন পাবেন এবং জেনে বুঝেই প্রোডাক্ট প্রমোশনে নামতে হবে। নিচে কিছু জনপ্রিয় এফিলিয়েট প্রডাক্ট এর লিস্ট দিলাম যেসব প্রডাক্টের কমিশন অনেক বেশি।

  1. ডোমেইন হোস্টিং
  2. মোবাইল বা স্মার্টফোন
  3. ওয়ার্ডপ্রেস থিম
  4. বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার
  5. বিভিন্ন জনপ্রিয় বই
  6. কাপড় ও জামা

জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম

বর্তমানে যেসব এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে তাদের মধ্যে জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ও তাদের বিস্তারিত নিচে তুলে ধরলাম।

Amazon Associates

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস আমাজনের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের নাম হচ্ছে Amazon Associates, এটি মূলত ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বিক্রয়ের জন্য বেস্টএফিলিয়েট প্রোগ্রাম এবং তাদের অনেক ডিজিটাল প্রোডাক্টও রয়েছে।

Themeforest.net

এটি মূলত ডিজিটাল প্রডাক্ট এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম, এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাবেন এবং এরা কমিশনও অনেক ভালো দেয়।

Clickbank.com

এখানে আপনি প্রায় সব ধরনের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম পেয়ে যাবেন। এখানে বই, গেম, সফটওয়্যার আরও অনেক কিছু সেল হয়। এটি মূলত লীড জেনারেশন ও ডিজিটাল সার্ভিস রিলেটেড এফিলিয়েট প্রোগ্রাম।

CJ Affiliate

এ প্রোগ্রামটিও ডিজিটাল পণ্য নিয়ে নির্মিত। যদি ডিজিটাল Product নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করতে চান তাহলে সবচেয়ে বেস্ট ওয়েবসাইট হচ্ছে CJ Affiliate প্রোগ্রাম।

Ebay Partner Network

এটি আমাজান এর মতই ফিজিক্যাল প্রডাক্ট বিক্রয়ের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এদের বেশকিছু ডিজিটাল প্রোডাক্টও রয়েছে।

আরও কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম হচ্ছে,

  1. Commission Junction
  2. LinkShare
  3. ShareASale
  4. Google AdSense network
  5. ClixGalore
  6. PeerFly
  7. MaxBounty

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কিছু সাধারণ ভুল

এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) শুরু করতে গিয়ে অনেকেই কিছু সাধারন ভুল করে থাকেন, সেসব ভুল গুলো যদি শুরুতেই শুধরে নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য খুবই ভালো হবে। আসুন কিছু জরুরী জিনিস জেনে নিই যা আপনাদের এফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ারে কাজে লাগবে।

  1. একসাথে অনেক গুলো নিশ বা প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন না। এতে করে আপনার ওয়েবসাইট গুগলে র‍্যাংক করবে না কারন গুগল নিশ ওয়েবসাইটকে বেশী র‍্যাংক করায়, ফলে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসা কমে যাবে। 
  2.  একসাথে অনেক গুলো কোম্পানির প্রডাক্ট প্রমোশন করবেন না। এতে করে আপনি আপনার কাস্টমারদের কনফিউজড করে ফেলবেন এবং সেল করতে পারবেন না। 
  3.  আপনি যেই প্রডাক্ট এর উপর এক্সপার্ট বা ভালো জানেন সেই প্রডাক্ট নিয়েই কাজ করুন। লোভের বশে অন্য প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করতে গেলে আপনি আপনার ইন্টারেস্ট হারাবেন এবং ভালো আয় করতে পারবেন না। 
  4. গুগল এডসেন্স ও এফিলিয়েট মার্কেটিং একসাথে করতে যাবেন না। এতে করে আপনি যে প্রডাক্ট এর রিভিউ লিখছেন তার উপর অন্য প্রডাক্ট এর এড চলে আসবে এবং ভিজিটর কনফিউজড হয়ে যাবে। 
  5.  ধৈর্য ধারন করতে হবে ও লেগে থাকতে হব, কাজ থামানো যাবে না। আপনি প্রতিদিন ১ ঘন্টা সময়ও যদি দেন তাহলেও ধীরে ধীরে আগাতে থাকবেন এবং সফলও হবেন। 
  6. ভালো মানের আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন এবং অন্যদের কন্টেন্ট দেখে দেখে শিখুন। ভুলেও অন্যের কন্টেন্ট নিজের ওয়েবসাইটে কপি করে চালিয়ে দিবেন না। এতে করে গুগল আপনার ওয়েবসাইট সাসপেন্ড করে দিতে পারে।

আমার এই লেখাটি যদি আপনার কাছে ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না এবং আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টে জানান।

 Share this post from here. 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram